বর্ধমানের রানি বসন্তকুমারীর প্রেম কাহিনী

21st August 2020 11:34 am শিক্ষা
বর্ধমানের রানি বসন্তকুমারীর প্রেম কাহিনী


    লেখক : ডঃ সর্বজিৎ যশ

 (আঞ্চলিক ইতিহাস ও লোক সংস্কৃতি বিশেষজ্ঞ)

         বর্ধমান রাজ তেজচাঁদ রাই রাজত্ব করেন ১৭৭০ খ্রিস্টাব্দ থেকে ১৮৩২ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত। তার ৮ জন রানি সহ একজন বিদেশি রক্ষিতা ছিলেন। তার বিবাহিত ৮ জন পত্নীর নাম হল - ১) জয় কুমারী, ২) প্রেম কুমারী,৩) সেতাব কুমারী৪) তেজ কুমারী, ৫) কমল কুমারী, ৬) নানক কুমারী, ৭) উজ্জ্বল কুমারী এবং  ৮)   বসন্ত কুমারী। তেজ চাঁদের সাথে যখন অষ্টম স্ত্রী বসন্ত কুমারীর বিবাহ হয় তখন তেজ চাঁদের বয়স ৬২ বছর ,আর বসন্ত কুমারীর ১১ বছর। আসলে বসন্ত কুমারীর পিতা পরানচাঁদ কাপুর এই বিয়ের মূল হোতা ছিলেন , এখানে জেনে রাখা ভালো রাজার পঞ্চম স্ত্রী কমল কুমারীর দাদা ছিলেন পরানচাঁদ কাপুর, এখন তিনি রাজার শ্যালক ও শ্বশুর দুইই হলেন ।
         বসন্ত কুমারী ছিলেন অসামান্যা রূপবতী, তেজচাঁদের মৃত্যুর আগে কলকাতার চিনা বাজার সহ কলকাতা ও বর্ধমানের বহু ভূ সম্পত্তি বসন্ত কুমারীকে দান করে যান। কিন্তু রাজার মৃত্যু হলে বসন্ত কুমারীর ২১ বছর বয়স না হাওয়ায় তিনি ভোগ দখলের অধিকার থেকে বঞ্চিত হচ্ছিলেন, তাই তিনি সুপ্রিম কোর্টে মামলা করেন এই বলে যে পরানচাঁদ ও কমল কুমারী তাকে নজরবন্দি করে রাখছেন এবং তার সম্পত্তির তিনি দখল পাচ্ছেন না ।
          ১৮৩৯ খ্রিস্টাব্দের সেপ্টেম্বরে সদর দেওয়ানী আদালত রানির পক্ষে আদেশ দান করলেও বর্ধমানের জজ সাহেব নানা অজুহাতে তা কার্যকরী করেননি । তখন  বসন্ত কুমারীর কর্মচারী মদন মোহন কাপুর নতুন করে উকিল নিয়োগ করেন উইলিয়াম প্রিন্সেস , দক্ষিণারঞ্জন মুখোপাধ্যায় ও হেজর সাহেব কে ।
       মামলার  তদারকি করতে রানি বসন্ত কুমারীকে  কলকাতা যেতে হতো। সুপুরুষ  বিপত্নীক দক্ষিণারঞ্জন এর সাথে সুন্দরী  বিধবা রানি বসন্ত কুমারীর প্রেম জমে যায়। পরবর্তীকালে বসন্ত কুমারী আদালতের রায়ে জিতে যান এবং কলকাতাতেই থেকে যান,  তাদের হিন্দু মতে বিবাহ হয়। এদের ভালোবাসার কাহিনী টমাস এডোয়ারড অতিরঞ্জিত করে মুখরোচক সংবাদ প্রকাশ করতেন ।      দক্ষিণারঞ্জন কর্মসূত্রে নানা জায়গাতে বসবাসের পর শেষ জীবনে লখনৌতে বসবাস করতেন। তাদের এক পুত্র ও দুই কন্যা সন্তান ছিল, অবশেষে , ১৮৭৮ খ্রিস্টাব্দে দক্ষিণারঞ্জন এবং ১৯০০ খ্রিস্টাব্দে বসন্ত কুমারী পরলোক গমন করেন ।





Others News

বিদ‍্যাসাগরের জন্মদিনে বিশেষ অনুষ্ঠান বর্ধমান ইতিহাস ও পুরাতত্ত্ব চর্চা কেন্দ্রের

বিদ‍্যাসাগরের জন্মদিনে বিশেষ অনুষ্ঠান বর্ধমান ইতিহাস ও পুরাতত্ত্ব চর্চা কেন্দ্রের


বিশেষ সংবাদদাতা ( বর্ধমান ) :  ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর মহাশয়ের জন্মদিনে উপলক্ষে বর্ধমান ইতিহাস ও পুরাতত্ত্ব চর্চা কেন্দ্রের উদ্যোগে  বর্ধমান শহরের বাবুরবাগ রোডে 'সোনার তরী' অনুষ্ঠান মঞ্চে একটি আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়। বিদ্যাসাগরের ছবিতে মালা প্রদান করে অনুষ্ঠানের সূচনা করা হয়। উদ্বোধনী সঙ্গীত পেশ করেন স্বাগতা বন্দোপাধ্যায় । স্বাগত ভাষণ দেন বর্ধমান ইতিহাস ও পুরাতত্ত্ব চর্চা কেন্দ্রের সম্পাদক ড. সর্বজিৎ যশ। প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন শ্যামসুন্দর কলেজের অধ্যক্ষ ড. গৌরী শঙ্কর বন্দোপাধ্যায়।ছাড়াও বক্তব্য রাখেন ড. রঙ্গন কান্তি জানা, ড. অর্ধেন্দু সরকার, ড. মোহন পাল, ড. ঝর্না বর্মন, ড. জহির আব্বাস, ড. মেধাতিথি বর্মন, রক্ষকর কুন্ডু প্রমুখ। এছাড়াও কবিতা পাঠ করেন দিপেন্দ্র নাথ শীল, সেখ জাহাঙ্গীর প্রমুখ। এই অনুষ্ঠানে ড. ঝর্না বর্মন লিখিত 'প্রাগাধুনিক সাহিত্য' বইটির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন ড. গৌরী শঙ্কর বন্দোপাধ্যায় এবং বর্ধমান ইতিহাস ও পুরাতত্ত্ব চর্চা কেন্দ্রের নিউজ বুলেটিন 'ভূর্জপত্র' প্রকাশ করেন সাংবাদিক প্রবীর চট্টোপাধ্যায়। সমগ্র অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করেন শ্যামাপ্রসাদ চৌধুরী এবং সভাপতিত্ব করেন প্রবীর চট্টোপাধ্যায়।সমস্ত রকম সামাজিক দূরত্ব বিধি অনুযায়ী অনুষ্ঠান পরিচালনা করা হয়।